আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলা

আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলাপাবনা জেলার বেড়া উপজেলার একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এটি ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

Table of Contents

সংক্ষিপ্ত বর্ণনা

পাবনা জেলাধীন বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের (বর্তমান কৈটোলা ইউনিয়নকৈটোলা গ্রামে ১৯৭২ খ্রিঃ মির্জা আব্দুল আউয়াল আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলা নামের প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। বিদ্যালয় স্থাপনের সকল প্রকার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে তৎকালীন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির মাধ্যমে (যাহার স্মারক নং ১০/৩এ-১১/৭৭ তাং ২৫/১০/১৯৭৭ খ্রিঃ) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, রাজশাহী কর্তৃক একাডেমিক স্বীকৃতি পায় ০৯-১২-১৯৭৭ খ্রিঃ। অতঃপর ২৩-১১-১৯৭৮ খ্রিঃ বিদ্যালয়টি প্রথম মঞ্জুরী পায়। ১৯৭৯ সালে বিদ্যালয় হইতে প্রথম ব্যাচ হিসাবে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। ০১-০৬-১৯৮৫ খ্রিঃ বিদ্যালয়টি এম.পি.ও ভূক্তি হয়। বিদ্যালয় কোড নং ৩১৫৩, এম.পি.ও কোড নং ৮১০২০৩১৩০১, ইআইআইএন নং ১২৫৩১৬, ইমেইল: ahskbera@gmail.com বিদ্যালয়টি ১৩-০১-২০০৫ খ্রিঃ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক দুইটি ট্রেডসহ ভোকেশনাল শাখা অনুমতি লাভ করে। যাহার কোড নং ২৬০৬৭। এম.পি.ও ভূক্তি হয় ৩১-০৫-২০১০ খ্রিঃ । এম.পি.ও কোড নং V-২০১০৩০০১৮৮। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে বিজ্ঞানমানবিক ও এস.এস.সি ভোকেশনাল শাখা চালু আছে। বিদ্যালয়টিতে ৩টি তিন তল ও ১টি একতল ভবন বিদ্যমান। বিদ্যালয়টিতে গত ০৮-০২-২০১১ খ্রিঃ যাহার স্মারক নং শিম/শাখা-১১/৭-৬৮/২০১০/৫৬ মূলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় হইতে ষষ্ঠ, সপ্তম, অস্টম শ্রেণীতে দুইটি করে মোট ৬টি অতিরিক্ত শ্রেণী শাখা অনুমতি লাভ করে।

প্রতিষ্ঠাকাল

১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের ৩১/১২/১৯৭২ ইং তারিখে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

ইতিহাস

পাবনা জেলার বেড়া উপজেলার অন্তর্গত নতুন ভারেঙ্গা ইউনিয়নের (বর্তমান কৈটোলা ইউনিয়ন) কৈটোলা গ্রামে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলা নামের বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। জয়নগর গ্রামের বিত্তশালী উচ্চ শিক্ষিত সাবেক পাকিস্থানের জাতীয় পরিষদের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদ সদস্য মজলুম জননেতা ও মেহনতী মানুষের বন্ধু জনাব মির্জা আব্দুল আউয়াল ১৯৭২ খ্রিঃ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রকৃত পক্ষে বিদ্যালয়টির অবস্থান থেকে ৫ বর্গ মাইলের মধ্যে কোন উচ্চ বিদ্যালয় ছিল না। সঙ্গত কারণেই অত্র বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন ছিল।

বিদ্যালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় হইতে ৫ম শ্রেণী পাশকৃত বিশেষ করে মেয়েরা কোনরূপ উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিল। বিদ্যালয়টি স্থাপনের পূর্বে অত্র এলাকার কোন গ্রামেই বলা চলে এস.এস.সি পাশ কোন মেয়ে ছিল না। এমনকি খুব কম সংখ্যক ছেলেই দীর্ঘ পথ অতিক্রম করে পড়ালেখা করায় উৎসাহী ছিল না। বর্ষা মৌসুমে নৌকা যোগে অনেক দূরের বিদ্যালয়ে যাওয়া ছিল খুবই দূরহ। অত্র এলাকার ৯৮% ছেলে মেয়ে ছিল শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। এই বৃহত্তর শিক্ষার আলো বঞ্চিত জনগোষ্ঠির কথা ভেবে অত্র এলাকার ঐতিহ্যবাহী মির্জা পরিবার উচ্চ শিক্ষিত সদস্য ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ এলাকায় একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপনের স্বপ্ন দেখেন এবং স্বপ্নটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পরিকল্পিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করেন। এলাকায় ব্যাপক জনসংযোগের মাধ্যমে নিরক্ষর জনগনকে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন। তৎপর এলাকারবাসীর সার্বিক সমর্থন নিয়ে বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ৩১-১২-১৯৭২ তারিখে কৈটোলা গ্রামে খেলার মাঠে একটি সাধারণ সভার আয়োজন করা হয়। উক্ত সভায় শিক্ষানুরাগী বিদ্যুৎসাহী, কৃষক, জেলেসহ সর্বসত্মরের ব্যক্তি উপস্থিত হয়। মোঃ আছামালী বেপারীর প্রস্তাবানুসারে মির্জা আব্দুল বাসেদের সমর্থনে জনাব মির্জা আব্দুল আউয়ালকে সভাপতি মনোনিত করে সভার কার্য যথারীতি শুরু হয়। উক্ত সভায় আলোচনা ও পর্যালোচনার মাধ্যমে কৈটোলা গ্রামে একটি উচ্চ বিদ্যালয় স্থাপনে সবসম্মত গৃহিত হয় এবং নিম্নোক্ত বিষয় সমূহ পরবর্তী সভায় আলোচনা ও জন্য উপস্থাপনের গৃহিত হয়।

আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলা
Adarsha High School, Kaitola
ঠিকানা
কৈটোলা, বেড়া, পাবনা
পাবনা৬৬৮১
বাংলাদেশ
তথ্য
ধরনবেসরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
প্রতিষ্ঠাকাল১৯৭২; ৫০ বছর আগে
প্রতিষ্ঠাতামির্জা আব্দুল আউয়াল
চেয়ারম্যানমির্জা তারিক হিকমত
প্রধান শিক্ষকমির্জা কামাল পাশা (ভারপ্রাপ্ত)
কর্মকর্তা ও কর্মচারী২৯ জন
শ্রেণী৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি (৯ম, ১০ম ভোকেশনাল সহ)
শিক্ষার্থী সংখ্যা১৩৫৬ জন (২০২৩)
ভাষাবাংলা
রঙসাদা এবং কালো
ডাকনামআউবিকৈ
ওয়েবসাইট

(ক) বিদ্যালয়টির নামকরন

(খ) বিদ্যালয়ের জন্য জায়গা নির্ধারণ

(গ) কার্যকরী কমিটি গঠন

বিদ্যালয়টির নামকরন

পরবর্তী সভা ১৫-০১-১৯৭৩ খ্রিঃ অনুষ্ঠিত হয়। অত্র সভা মির্জা আব্দুল আউয়ালের প্রস্তাবকৃত বিদ্যালয়টির নামকরণের জন্য আলোচনা পর্যালোচনা করে সর্বসম্মতিক্রমে এই উপনীত হয় যে, বিদ্যালয়টির নাম হবে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, কৈটোলা

বিদ্যালয়ের জন্য জায়গা নির্ধারণ

এই সভায় বিদ্যালয়ের জায়গা বিষয়াদি আলোচনা করার পর সর্বসম্মতিক্রমে এই উপনিত হয় যে, হরিরামপুর মৌজার কৈটোলা গ্রামের তহসীল অফিসের পশ্চিম পার্শ্বে শীল বাড়ীতে বিদ্যালয়টি স্থাপন করা হবে। প্রাস্তবটি গৃহিত হওয়ার পর জনাব মির্জা আব্দুল আউয়ালের দানকৃত টাকা এবং এলাকার ব্যক্তিবর্গের দানকৃত টাকা দ্বারা উক্ত শীল বাড়ী ক্রয় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। পরবর্তীতে উক্ত জায়গার ০.৩৪ একর জমি বিদ্যালয়ের নামে ক্রয় দলীল রেজিষ্ট্রি করা হয়।

কার্যকরী কমিটি গঠন

এই সভায় আরও সর্বসম্মতি গ্রহণ করে যে, বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হইবে। উক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ঐতিহ্যবাহী মির্জা পরিবারের অপর সদস্য জনাব মির্জা আব্দুল হালিমকে সর্বসম্মতিক্রমে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হয়। অতঃপর বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় কার্যকরী কমিটির সদস্যদের তালিকা তৈরী করে সর্বসম্মতিক্রমে তা অনুমোদন করা হয়।

ক্রঃ নংনামপদবী
০১মির্জা আব্দুল আউয়ালসভাপতি
০২মির্জা আব্দুল বাসেদসম্পাদক
০৩মোঃ আব্দুল জববারসদস্য
০৪মোঃ আছামালী ব্যাপারীসদস্য
০৫মোঃ ইয়াকুব আলীসদস্য
০৬মোঃ আব্দুল বাতেন মোল্লাসদস্য
০৭মির্জা আব্দুল সাত্তারসদস্য
০৮ডাঃ মোঃ আঃ কাদেরসদস্য
০৯মোঃ জয়নুল আবেদীন মোল্লাসদস্য
১০আলহাজ্ব মোঃ বরকত আলী প্রাংসদস্য
১১শ্রী আকাশ কলি দাসসদস্য
১২মির্জা আব্দুল হালিমপ্রধান শিক্ষক

বিদ্যালয়টিতে প্রথম অবস্থায় একটি টিনের ঘরে ষষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণী পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। কিছুদিন পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মির্জা আব্দুল হালিম অন্যস্থানে চাকরি নিয়ে চলে যাওয়ায় প্রধান শিক্ষকের পদ শূণ্য হয়। বিদ্যালয়টি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বিদ্যালয়ের কার্যকরী কমিটি জনাব মোঃ আব্দুস সাত্তারকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করেন। এর মধ্যে তৎকালীন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার নতুন বিদ্যালয় স্থাপনের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে এলাকার জনগন হতাশ হয়ে পড়েন। কিন্তু জনাব মির্জা আব্দুল আউয়াল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী ক্যাপ্টেন এম মনছুর আলীর সাহেবের সহায়তায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় সকল প্রকার নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে এক পত্রের মাধ্যমে (যাহার স্মারক নং ১০/৩ এ-১১/৭৭ তাং ২৫/১০/১৯৭৭ খ্রিঃ) মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড রাজশাহীকে উক্ত বিদ্যালয়টির অনুমতি প্রদানের নির্দেশ প্রদান করেন। সেই অনুমতির মাধ্যমে শিক্ষাবোর্ড ০৯/১২/১৯৭৭ খ্রিঃ যাহার স্মারক নং IV/S/1206/3348 একাডেমিক স্বীকৃতি প্রদান করেন। পরবর্তীতে ২৩/১১/১৯৭৮ খ্রিঃ যাহার স্মারক নং ৪/এস/২২৬/২৪২১ মোতাবেক বিদ্যালয়টিকে প্রথম স্বীকৃতি দান করা হয়। ফলে ১৯৭৯ খ্রিঃ অত্র বিদ্যালয় থেকে প্রথম ব্যাচ হিসাবে শিক্ষার্থীরা এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। ০১-০৬-১৯৮৫ খ্রিঃ বিদ্যালয়টি প্রথম এম.পি.ও ভূক্ত হয়। বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রীদের কথা বিবেচনা করে অত্র এলাকার ঐতিহ্যবাহী হাজী ব্রাদার্স ফুটবল মাঠটি ক্লাব কর্তৃপক্ষ বিদ্যালয়ে দান করেন। উক্ত জমির পরিমাণ ২.৭৪ একর। সর্বসাকুল্যে অÎবিদ্যালয়ের মোট জমির পরিমাণ ৩.০৮ একর।

কারিগরি শিক্ষা বিকাশে অত্র বিদ্যালয়ে ভোকেশনাল শাখা খোলার জন্য বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষাবোর্ডে আবেদন করলে ১৩-০১-২০০৫ খ্রিঃ এস. এস.সি ভোকেশনাল শাখা খোলার অনুমতি প্রদান করেন। উক্ত কারিগরি শাখা ৩১-০৫-২০১০ খ্রিঃ এম.পি.ও ভুক্ত হয়। বর্তমানে কারিগরি শাখায় 4টি ট্রেড চালু আছে। অত্র বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী ক্রমাগত বৃদ্ধির ফলে অতিরিক্ত শ্রেণী শাখা খোলার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে আবেদনের প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রণালয় গত ০৮-০২-২০১১ খ্রিঃ যাহার স্মারক নং শিম/শাখা-১১/৭-৬৮/২০১০/৫৬ পত্র মোতাবেক ষষ্ঠ, সপ্তম, অস্টম শ্রেণীতে মোট ৬টি শাখা খোলার অনমতি প্রদান করে।

বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মির্জা কামাল পাশা এর নেতৃত্বে অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলীর দ্বারা সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হইয়া আসিতেছে।